খেজুর গাছ তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছে সীমান্তবর্তী যশোরের চৌগাছার গাছিরা। শীতের আগমনী বার্তায় রস সংগ্রহের উদ্দেশে খেজুর গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ উপজেলার গাছিরা।
মৌসুমী ও পেশাদার গাছিরা এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেজুর গাছ প্রস্তুত করে যাচ্ছেন। আর মাত্র দুই সপ্তাহ পরেই নলেন গুড়ের স্বাদ পাবে মানুষ। তবে খেজুর গাছ তোলা, রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে গুড় তৈরি পর্যন্ত যে শ্রম ও অর্থ ব্যয় হয়, সেই অনুযায়ী গুড় বা পাটালির দাম পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ গাছিদের।
দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাওয়া এবং একই সাথে নতুন গাছি না পাওয়ায় এ পেশা বেশ সংকটের মুখে। বেশ পরিশ্রমের কাজ বলে অনেকে আবার ভিন্ন পেশায় চলে যাচ্ছে। যার ফলে ‘যশোরের যশ, খেজুরের রস’ চিরন্তন এই বানী এখন হারিয়ে যেতে বসে।
তবে চৌগাছা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত কয়েক বছর ধরে খেজুর গাছ সংরক্ষণে বেশ সোচ্চার, যেমন গাছিরা সজাগ, তেমনি সাধারণ মানুষও সোচ্চার হয়েছেন। সেই সাথে গত দুই বছরে চৌগাছাতে খেজুর গুড়ের মেলা হওয়ায় এখন খেজুর গাছ রক্ষা এবং অধিক পরিমাণে গাছ রোপণে হারানো সেই দিন যেন ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করেছে মনে করছেন অনেকে। সড়কের পাশে এমনকি পতিত জমিতে জন্ম নেওয়া খেজুর গাছ তুলতে ব্যস্ত গাছিরা।
দিনে তাপমাত্রা এখনও বেশি হলেও ভোরে দেখা মিলছে ঘন কুয়াশা আর মৃদু শীত। কুয়াশা আর মৃদু শীতই জানান দিচ্ছে অচিরেই জেকে বসবে ঠান্ডা আর দেখা মিলবে রস গুড় ও পাটালির।
তবে নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক গাছি বলেন, রস সংগহ আর গুড় তৈরিতে যে শ্রম ও অর্থ ব্যয় সেই অনুযায়ী আমরা গাছিরা গুড়ের দাম পাই না। আমাদের বিষয়টি সকলকে গুরুত্ব দিতে হবে।
গাছিরা আরো বলেন, এমন এক সময় ছিলো ইটভাটার মালিকরা নির্বিচারে খেজুর গাছ নিধন করেছে। অভাবকে পূঁজি করে তারা গাছ মালিককে খেজুর গাছ কাটাতে বাধ্য করেছে। এখনও কিছু কিছু ইটভাটা আছে তারা নিয়মিত খেজুর গাছ ভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে খেজুর গাছ তার হারিয়ে যাওয়া দিন আবার ফিরে পাবে, মিলবে কাঙ্খিত রস ও গুড়।
খুলনা গেজেট/এএজে